১. সাত শ্রেণির লোকের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে বেঁচে থাকবে। তারা হলো, এক. মুশরিক বা শিরকে লিপ্ত। দুই. কোনো মুমিন ভাইয়ের সাথে অন্যায়ভাবে বিদ্বেষ পোষণকারী। তিন. মদ্যপায়ী বা নেশাগ্রস্ত। চার. আত্মহত্যাকারী। পাঁচ. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। ছয়. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী। সাত. পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান। কেননা, হাদিসের কিতাবসমূহে বর্ণিত হয়েছে, এ ফজিলতপূর্ণ রাতে আল্লাহ তাঁর সব বান্দাকে ক্ষমা করলেও এ সাত শ্রেণির লোককে ক্ষমা করবেন না।
২. এ রাতে ব্যক্তিগতভাবে ঘরে একাকী নফল সালাত, তিলাওয়াত ও জিকির-আজকার করতে পারবে। এ রাতে ইবাদত করার উদ্দেশ্যে মসজিদে জমায়েত হবে না। অনুরূপ অন্য কোথাও জামাআতবদ্ধ হয়ে ইবাদত করবে না। উত্তম হলো, রাতে ইশার সালাত ও সকালে ফজরের সালাত মসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করা। এতে সারারাত ইবাদত করার সওয়াব হবে। এটা অবশ্য শুধু এ রাতের বৈশিষ্ট্য নয়, সারা বছরই এ ফজিলত পাওয়া যায়

৩. আগামীকাল সিয়াম রাখার হাদিসটি অত্যন্ত দুর্বল পর্যায়ের, যা উলামায়ে কিরামের দৃষ্টিতে কোনো ক্ষেত্রেই আমলযোগ্য নয়। বস্তুত শবে বরাতের জন্য বিশেষ কোনো সিয়াম নেই। তাই আগামীকাল শবে বরাতের নামে সিয়াম রাখবে না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি শাবান মাসে অধিক সিয়াম রাখার হাদিসের ওপর আমল করে এবং আগে-পরে এভাবে সে সিয়াম পালন করে থাকে কিংবা তার আইয়ামে বিজ হিসেবে প্রতি মাসে তিনটি সিয়াম রাখার অভ্যাস থাকে তাহলে সে ধারাবাহিকতায় সিয়াম রাখতে পারে। এছাড়া শুধু শবে বরাতের নামে একটি সিয়াম পালন করা প্রমাণিত নয়। অনেক আলিম এটাকে বিদআত বলেছেন।
৪. এ রাতে কবর জিয়ারতের হাদিসটি দুর্বল হলেও তা মারাত্মক পর্যায়ের দুর্বল নয়। এজন্য কেউ চাইলে মাঝেমধ্যে একাকী ব্যক্তিগতভাবে কবরস্থানে গিয়ে কবর জিয়ারত করতে পারে। তবে এটার জন্য মানুষকে ডাকাডাকি করলে বা এটাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবছর নিয়মিত আমলে পরিণত করলে সেটা বিদআতে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে। তাই এ ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
৫. এছাড়া আমাদের দেশে এ রাত নিয়ে যত ধরনের কথা, রুসুম ও আকিদা প্রচলিত আছে, সবই পরিত্যাজ্য। যেমন- এ রাতে বিশেষভাবে গোসল করা, আলোকসজ্জা করা, হালুয়া-রুটি বানানো, আনন্দ ও হৈ-হুল্লোড় করা, মৃত ব্যক্তির রুহ ঘরে আসার আকিদা ইত্যাদি। এসব কাজ ও বিশ্বাস থেকে আমরা নিজেরাও বিরত থাকব এবং অন্যদেরকেও বিরত থাকতে বলব। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
বি. দ্র. : ইতোপূর্বে শবে বরাত নিয়ে বিস্তারিত ও প্রামাণ্য একটি আর্টিকেল পোস্ট করেছি। কারও এ ব্যাপারে বিশদ জানার ইচ্ছা হলে দুটি পোস্টের পূর্বে পাবলিশ করা এসংক্রান্ত প্রামাণ্য আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।